মাতৃত্ব সকল মেয়ের কাছে অত্যন্ত আবেগের বিষয় । একজন নারী যখন জানতে পারেন তিনি মা হতে চলেছেন তখন থেকে তার সব ভাবনা চিন্তা চলে যায় তার অনাগত সন্তানের প্রতি । কিন্তু অনাগত সন্তানের সুস্থতা নিয়ে ভাবতে গিয়ে বেশিরভাগ হবু মা নিজের যত্ন নিতে ভুলে যায় । অথচ এই সময়েও প্রত্যেক হবু মায়ের উচিত নিজের ত্বকের যত্ন নেওয়া । আর ত্বক ভাল থাকলে মন ও ভাল থাকে ।

গর্ভাবস্থার সময়ে ত্বকের পরিবর্তন –

গর্ভাবস্থার সময়ে ত্বকে অনেক পরিবর্তন আসে । কিছু কিছু মায়েদের ক্ষেত্রে কোন সমস্যাই দেখা দেয় না, এছাড়া হরমোনাল পরিবর্তনের জন্য বেশিরভাগ হবু মায়ের ত্বকেই অনেক সমস্যা দেখা দেয় ।

সবথেকে সাধারণ কিছু সমস্যা হচ্ছে – 

১) ত্বক শুষ্ক হয়ে যায় অনেক বেশি এবং ব্রনের সমস্যা বেড়ে যায় । 

২) চোখের নিচে কালি পরে যায় ।

৩) ত্বকে বিশেষ করে গলা, ঘাড়, আন্ডারআর্মস ইত্যাদি স্থানে কালচে ধরনের কিছু দাগ দেখা যায়, একে ডাক্তারি ভাষায় মেলাজমা (Melasma) বলা হয় ।

৩) কারো যদি গর্ভাবস্থার আগে থেকেই ত্বকের সমস্যা থেকে থাকে যেমন একজিমা সোরিয়াসিস, ইত্যাদি এ সময়ে সেটা পরিবর্তন হয় । কারও ক্ষেত্রে ভালো হয়, কারও ক্ষেত্রে অবস্থার অবনতি হয় ।

৪) গর্ভাবস্থার সময় স্ট্রেচ মার্কস খুবই সাধারণ একটা সমস্যা, এছাড়াও ফাঙ্গাল ইনফেকশন, ইচিনেস এই ধরনের সমস্যাও দেখা দেয়। 

কিভাবে এ সময়ে নিরাপদ উপায়ে ত্বকের যত্ন নিতে হবে ? 

•  দিনের বেলায় ভাল কোন মাইল্ড ক্লিনজার অথবা ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে হবে । 

•  এরপর ত্বকের ধরন বুঝে হাইড্রেটিং, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট বা প্রাকৃতিক উপাদানযুক্ত টোনার ব্যবহার করবেন । 

•  এরপর ত্বকে খাপ খায় এরকম কোন ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন যেটা অবশ্যই লাইটওয়েট হয় কিন্তু বেশি পরিমানে যেন ত্বকে আর্দ্রতা দেয় ।  

•  এমন কোন সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন যাতে এসপিএফ ৩০ থেকে ৫০ থাকে এবং প্যারাবেন ফ্রি । 

•  সপ্তাহে একদিন অবশ্যই কোন প্রাকৃতিক স্ক্র্যাব ব্যবহার করতে হবে, এক্ষেত্রে বেসন, যষ্ঠিমধুর গুড়ো এবং মধু দিয়ে প্যাক বানিয়ে সহজেই ব্যবহার করতে পারেন । 

এছাড়া স্ট্রেচমার্ক যেহেতু এই সময়ে ত্বকের একটি বড় সমস্যা, এটাকে প্রতিহত করার জন্য গর্ভাবস্থার শুরু থেকেই তলপেট, বুক সহ যেসব জায়গায় স্ট্রেচমার্ক পরার সম্ভাবনা বেশি থাকে সেসব জায়গায় অলিভ অয়েল ম্যাসাজ করলে স্ট্রেচমার্কের সমস্যা অনেকটাই কম হয় । 

এছাড়া  ভিটামিন ই, ভিটামিন বি৩, গ্রিন টি, অ্যালোভেরা, ফ্রুটস এক্সট্র্যাক্ট, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আছে এই ধরনের প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে পারেন । এর পাশাপাশি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চলুন, সবুজ শাকসবজি খান, গর্ভাবস্থায় রোজ একটু হাঁটুন ।