ঝলমলে শাইনি চুল কার না পছন্দ ? কিন্তু আমরা চুলের প্রোপার কেয়ার সব সময় নিতে পারি না, কিংবা প্রোপারলি কেয়ার নেওয়ার পরেও কেন জানি চুলে জেল্লা দিচ্ছে না । আসলে আমাদের দেশের যে আবহাওয়া, যে পরিমাণ দূষণ, ডাস্ট তাতে চুল দূষণমুক্ত রাখাই টাফ । তাই আজকে আমরা জানব চুলের যত্নে কিছু ঘরোয়া প্যাক যা আমাদের চুলকে শাইনিং, ঝলমলে করতে হেল্প করবে । 

মধু ও কলার প্যাক –

আপনার স্ক্যাল্পে ইচিনেচ আছে, আবার একই সাথে শাইনিং চুল ও দরকার, সেক্ষেত্রে মধু ও কলার প্যাক ইউজ করতে পারবেন ইজিলি । এটা চুলকে ময়েশ্চারাইজড করে । 

উপকরণ – 

একটা পাকা কলা । 

এক কাপ অর্গানিক মধু । 

এক কাপ অলিভ অয়েল । 

পদ্ধতি -  

সব উপকরণ একসাথে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন । 

ভাল করে স্ক্যাল্পে, চুলে লাগান । 

পনেরো থেকে বিশ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন ।  

সপ্তাহে দুবার করুন । রেজাল্ট চোখে পরবে । 

মধু ও ডিমের প্রোটিন প্যাক – আপনার চুল যদি খুব ড্রাই হয়ে থাকে, তাহলে এই প্যাকটি আপনার জন্য । মধু আর ডিমের কুসুম, সেই সাথে বাদাম তেল আপনার চুলকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি জোগাবে । ডিম চুলকে প্রোটিন জোগাবে আর মধু ও বাদাম তেল চুলে কন্ডিশনারের কাজ করবে । 

উপকরণ -  

একটা ডিমের কুসুম নিন । 

 এক চামচ মধু । 

এক চামচ বাদাম তেল ।  

পদ্ধতি -  

একটি পাত্রে সব উপাদান ভালোভাবে মিক্স করে নিন ।

চুলে ভালোভাবে ম্যাসাজ করে অ্যাপ্লাই করুন । 

২০ থেকে ২৫ মিনিট চুলে রেখে ধুয়ে ফেলুন । 

প্যাক অ্যাপ্লাইয়ের একদিন পরে চুলে শ্যাম্পু করলে বেটার রেজাল্ট পাওয়া যাবে । 

অ্যালোভেরানারকেল তেল ও ভিটামিন ই – অ্যালোভেরার গুনের কথা কে না জানে ? শুধু অ্যালোভেরা চুলে লাগালেও চুল সিল্কি, স্মুদ হয়ে যায় । আপনার যদি রুক্ষ, ফাটা ফাটা চুল হয় তাহলে এই প্যাক ইউজ করতে পারবেন নিশ্চিন্তে।

উপকরণ - 

একটি ফ্রেশ অ্যালোভেরা । 

দুই চামচ ভার্জিন নারকেল তেল । 

ভিটামিন ই ক্যাপসুল ।  

পদ্ধতি -

ফ্রেশ অ্যালোভেরা থেকে ভেতরের জেলটা বের করে নিন । 

অ্যালোভেরা জেলের সাথে ভিটামিন ই ক্যাপসুল আর তেল ভালভাবে মিক্স করে নিন।

আধাঘন্টা পর ধুয়ে ফেলুন । চুল শাইনি হবে । 

কার্যকরি কিছু প্যাক তো জেনে নিলাম, কিন্তু শুধু প্যাক ইউজ করলেই হবেনা, পাশাপাশি চুলের যত্নে আরো কিছু ছোট ছোট বিষয় মাথায় রাখতে হবে ।

১) চুল খুব আঁটসাঁট করে বাঁধা থেকে বিরত থাকতে হবে  । এতে চুলের গোড়া আলগা হয়ে যায় । 

২) সপ্তাহে অন্ততপক্ষে তিন দিন শ্যাম্পু করতে হবে এবং শ্যাম্পুর পর অবশ্যই কন্ডিশনার ইউজ করতে হবে । 

৩) চুল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে । 

৪) পরিষ্কার বালিশের কভার ইউজ করতে হবে, কারন ঘরে থাকা জার্ম, ধূলাবালি ইত্যাদি বালিশের কভারেও লেগে থাকে, এতে করে চুলে রুক্ষতা আসে, চুল ড্যামেজ হতে শুরু করে ।

৫) চুল ড্রাই হলে ১০ থেকে ১৫ দিন পরপর, আর তৈলাক্ত হলে ১৫ দিন পরপর চুলে প্যাক লাগান। 

৬) ফ্রেশ শাকসব্জি খান নিয়মিত । তাহলে শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টির ঘাটতি পূরণ হবে, শরীর ভাল থাকলে চুল, স্কিন সবই সুন্দর থাকবে । 

৭) চুল নিয়মিত আঁচড়ান । চুল আঁচড়ালে স্ক্যাল্পে রক্তসঞ্চালন বাড়ে অনেক, তাতে করে নতুন চুল গজায় । 

৮) চুলে হিট দেওয়া থেকে বিরত থাকুন । চুলে হিট দিলে তাপের কারনে চুল ভেঙ্গে যায় দ্রুত ।  

চুল হেলদি, শাইনি রাখার জন্য যে আসলে অনেক হেয়ার প্রোডাক্টের দরকার হয় তা কিন্তু নয় । একটুখানি সময় নিয়ে কার্যকরী কিন্তু সহজ কিছু উপাদানের সাহায্যে চাইলেই আমরা চুলের যত্ন নিতে পারি ভালোভাবে । তাই নিজের যত্ন নিন, সুস্থ থাকুন, সুন্দর থাকুন ।