আপনি কি কখনো ডেজার্ট গোল্ড দেখেছেন? হয়ত না। আজ আমরা যে জিনিসটি নিয়ে কথা বলব সেটাকে বলা হয় গোল্ড অব দ্য ডেজার্ট । জোজোবা অয়েলকে বলা হয় মরুভূমির সোনা । জোজোবা অয়েল মূলত জোজোবা উদ্ভিদ থেকে তৈরী হয় । এটি দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়া, উত্তর পশ্চিম মেক্সিকোর স্থানীয় একটি গুল্ম । এই তেলের মৌলিক বৈশিষ্ট্য হচ্ছে দারুণভাবে আমাদের ত্বক এই তেল শুষে নেয় , যার কারনে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা কার্যকরী সমাধান দেয় এই তেল এবং শুধু ত্বক না সেই সাথে আমাদের চুলের সমস্যাতেও এই তেলের ভূমিকা প্রচুর । আর স্কিন ক্যাফে জোজোবা তেল হচ্ছে মরুভূমিতে হওয়া খাঁটি জোজোবার তেল । 

স্কিন ক্যাফে জোজোবা তেলের প্যাকেজিং এবং কনসেন্টেন্সি –

স্কিন ক্যাফে জোজোবা তেল আমাদের দেশীয় প্রোডাক্ট, তবে এর অরিজিন ইউনাইটেড স্টেটস অব আমেরিকা । ট্রান্সপারেন্ট ১২০ মিলির বোতলে গাড়ো সবুজ রঙের লেবেলে আসে বোতলটি । এটা কোল্ড প্রেসড, আনরিফাইন্ড, নন-কমিডোজেনিক, নন-অ্যালার্জিক এবং ১০০% ন্যাচারাল জোজোবা অয়েল। কোল্ড প্রেসড পদ্ধতিতে প্রস্তুত বলে এবং আনরিফাইন্ড প্রোডাক্টের নিউট্রিশনাল কোয়ালিটি নষ্ট হয় না । জোজোবা অয়েলের সেলফ লাইফ অন্যান্য ভেজিটেব্যল তেলের থেকে বেশি থাকায় এটিতে ট্রাইগ্লিসারাইড বেশি থাকে, যার কারনে উৎপাদনের তারিখ থেকে ২৪ মাস পর্যন্ত এটির মেয়াদ থাকে । স্কিন ক্যাফে জোজোবা অয়েল লিকুইড প্লান্ট ওয়্যাক্স যার কারনে এটি বেশ ঘন এবং দেখতে স্বচ্ছ হালকা সোনালী বর্ণের । 

স্কিন ক্যাফে জোজোবা তেল আসল কিনা বোঝার উপায় কি?

খাঁটি জোজোবা অয়েলের কোন গন্ধ থাকেনা, আর স্কিন ক্যাফে জোজোবা অয়েলের কোন গন্ধ নেই । 

ত্বক ও চুলের যত্নে স্কিন ক্যাফে জোজোবা অয়েল কিভাবে কাজ করে?

ত্বক ও ব্রনের সমস্যার ক্ষেত্রে জোজোবা অয়েলে থাকা ময়েশ্চারাইজিং এবং অ্যান্টি ইনফ্লেমেটোরি বৈশিষ্ট্যের মাধ্যমে সারিয়ে তোলে। শুধুমাত্র কয়েক ফোঁটার ব্যবহারেই এটি আমাদের ত্বকের ও চুলের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে পারে। 

১. স্কিন ক্যাফে জোজোবা অয়েল ব্রণ দূর করে –

একটি জার্মান সমীক্ষায় তাদের গবেষণায় জোজোবা অয়েল থেকে তৈরী একটি ফেস মাস্কের মাধ্যমে মুখের সমস্যা দূর করার বৈশিষ্ট্য দেখিয়েছে । তারা দেখিয়েছে যে এই তেল ক্ষতযুক্ত ত্বক ও হালকা ব্রন দূর করতে পারে । রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে মুখ ভালভাবে পরিষ্কার করার পরে ব্রনের উপর এবং ব্রনের দাগযুক্ত স্থানের উপর কয়েক ফোঁটা জোজোবা অয়েল হালকা হাতে ম্যাসাজ করে রেখে দিন। জোজোবা অয়েল ব্যবহারে ত্বকের তৈলাক্ত ভাব নিয়ে ভাবনার কিছু নেই । সাধারণত আমাদের ত্বক থেকে স্বাভাবিকভাবে যে তেল নিঃস্বরণ হয় সেই তেলের মতই জোজোবা তেল এবং এটা নন কমেডোজেনিক তাই এটা মুখের পোরস বন্ধ করবেনা। 

২. স্কিন ক্যাফে জোজোবা অয়েল ত্বককে ময়েশ্চাইজড করে –

জোজোবা অয়েল প্রায়ই ত্বকের যত্নের পণ্যগুলিতে হিউম্যাক্ট্যান্ট হিসাবে ব্যবহৃত হয় । এটি ত্বকে প্রতিরক্ষামূলক সীল তৈরী করে এবং ত্বককে ময়েশ্চারাইজড রাখে । জোজোবা অয়েলের সবচেয়ে আশ্চর্য দিক হচ্ছে এটি আপনার ত্বকের পোরস বন্ধ না করেই ত্বককে ময়েশ্চারাইজড করে, হাইড্রেট রাখে । জোজোবা অয়েল ত্বকের কোষের ভেতর দ্রুত সঞ্চালিত হয় এবং ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে, ত্বকের পানি হারিয়ে যাওয়ার বিরুদ্ধে সিল তৈরী করার কাজ করে। রোজ মুখ ভালভাবে ধুয়ে মুখে ভাল একটা টোনার ব্যবহারের পরে হাতের তালুতে কয়েক ফোঁটা জোজোবা অয়েল নিয়ে আলতো হাতে সারা মুখে বৃত্তাকারে ঘোরান । এছাড়াও ফাটা ঠোঁটে ও জোজোবা অয়েল ব্যবহার করতে পারেন ।  

৩. বার্ধক্যজনিত লক্ষণগুলিকে দ্রুত আসা থেকে প্রতিহত করে – 

স্কিন ক্যাফে জোজোবা অয়েল এর ময়েশ্চারাইজিং এবং অ্যান্টি ইনফ্লেমেটোরি বৈশিষ্ট্যের মাধ্যমে ত্বকে বার্ধক্যজনিত ছাপ দ্রুত পরা আটকায় । জোজোবা অয়েলের গঠন মানবশরীরের নিজস্ব সেবামের মতই, যার কারনে এটি ফাইন লাইন, রিংকেলের বিরুদ্ধে কাজ করে । একই সাথে এটি ত্বকে কোলাজেন সংশ্লেষন ক্ষমতা বাড়ায় । 

৪. চোখের পাপড়ি ঘন করা এবং লিপবাম হিসাবে স্কিন ক্যাফে জোজোবা অয়েলের ব্যবহার – 

স্কিন ক্যাফে জোজোবা অয়েল খুবই মৃদু, তাই এটি চোখের চারপাশে লাগানো যায় । আঙুলের অগ্রভাগে কয়েক ফোঁটা জোজোবা তেল নিয়ে চোখের পাপড়ির চারপাশে আলতো হাতে বোলান, তুলোর সাহায্যেও এটি করা যায়।  চোখের ভ্রু ঘন করার ক্ষেত্রেও এটি ব্যবহার করতে পারবেন । পাশাপাশি স্কিন ক্যাফে জোজোবা অয়েল লিপবাম হিসেবে অসাধারণ কাজ করে। শুষ্ক ফাটা ঠোঁটকে নরম ও কোমল করে তোলে ।    

৫. চুল বৃদ্ধিতে স্কিন ক্যাফে জোজোবা অয়েলের ভুমিকা –

স্কিন ক্যাফে জোজোবা অয়েলে ময়েশ্চারাইজিং বৈশিষ্ট্য থাকায় এটি চুলেও ব্যবহার করা যায় । চুলে কন্ডিশনারের সাথে সামান্য জোজোবা অয়েল মিশিয়ে নিলে এটি চুলকে কোমল করে, সেই সাথে চুলের রুক্ষতা দূর করে এবং চুলের আগা ফেটে যাওয়া থেকে রক্ষা করে । স্কিন ক্যাফে জোজোবা অয়েলে থাকা ভিটামিন ই মাথার চুল ও মাথার ত্বকের জন্য খুবই উপকারি । এই তেল মাথার খুশকি দূর করতে সাহায্য করে । 

৬. শেভিং এর আগে ও পরে ব্যবহার করার জন্য –

শেভিং করার আগে স্কিনে স্কিন ক্যাফে জোজোবা তেল ব্যবহার করলে স্কিনের ডেডসেল রিমুভ হয়, যার কারন ডেডসেল উঠে গিয়ে স্কিন স্মুদ হয়ে যায় এবং স্কিনের সারফেসটি স্মুদ হয়ে শেভিং এর জন্য স্কিন পরিপূর্নভাবে প্রিপেয়ার্ড হয় । শেভিং এর কারনে স্কিনে কোন প্রকার কাঁটাছেড়া হলে সেক্ষেত্রে জোজোবা তেল দ্রুত ক্ষত সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে ।

৭. মেকআপ রিমুভার হিসেবে ব্যবহার –

স্কিন ক্যাফে জোজোবা তেলের বহুব্যবহার সহ আর একটি ব্যবহার হচ্ছে মেকআপ রিমুভার হিসেবে । এটি হাইপোঅ্যালার্জেনিক, যার কারনে এটা স্কিনের পোরসকে ব্লক করে দেয়না । এটি সমস্ত মেকআপ, সানস্ক্রিন সহ স্কিনের ডেডসেল, ধুলাবালি সবকিছু খুব ভালভাবে পরিষ্কার করে । স্কিন কেয়ারের ফার্স্ট স্টেপ হিসেবে অয়েল ক্লিনজিং এ স্কিন ক্যাফে জোজোবা অয়েল কোন রকম হার্শনেস ছাড়াই ত্বককে শতভাগ পরিষ্কার করে তোলে । 

মার্কেট ঘুরলে অনেক কোম্পানির জোজোবা অয়েল পাওয়া যাবে, তবে প্রশ্ন যেহেতু ত্বকের সুতরাং খাঁটি বিশুদ্ধ জিনিসই ব্যবহারই শ্রেয় । বড় বড় শপিং মল, দোকানে সহ রুমঝুমবিডিতে অতি সহজে পেয়ে যাবে অরিজিনাল অথেন্টিক প্রোডাক্টটি । খুব সহজেই ঘরে বসেই রুমঝুমবিডিতে অর্ডার করেই পেতে পারেন স্কিন ক্যাফে জোজোবা অয়েলটি ।